কেশরাজ গাছের ১৩টি কার্যকরি উপকারিতা এবং চুলের যত্নে কেশরাজের ব্যবহার
বর্তমান যুগের মানুষ প্রায় পুরোপুরি কৃত্রিম ঔষধ এর উপর নির্ভর হয়ে পড়েছেন।কিন্তু সৃষ্টিকর্তা প্রকৃতির মাঝে আমাদের প্রায় অধিকাংশ রোগের ঔষধ বা রোগ নিরাময় করার জন্য ভেষজ দিয়ে রেখেছেন।আমাদের বাড়ির আশেপাশে আনাচে-কানাচে ভেষজগুণ সম্পূর্ণ উদ্ভিদ চিনতে পারিনা বা এসকল উদ্ভিদের গুণাগুণ সম্পর্কে আমাদের কোন ধারণা নেই বললেই চলে। তেমনি একটা ভেষজগুণ সম্পন্ন উদ্ভিদ হল কেশরাজ।
আজকে আমার পোষ্টের মাধ্যমে জানতে পারবেন কেশরাজ গাছের স্বাস্থ্য উপকারিতা সম্পর্কে।কেশরাজ উদ্ভিদটি চুলের জন্য বেশি উপকারি বলে একে কেশরাজ বলা হয়।এছাড়া ও চুলের যত্নে কেশরাজ তেলের উপকারিতা সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করব।সুতরাং পুরো পোস্টটি মনোযোগ সহকারে পড়ুন।
বিস্তারিত শুরু করার আগে সূচিপত্র দেখে নিনঃ
কেশরাজ গাছের পরিচিতি
কেশরাজ পতিত জমিতে বা বাড়ির আশেপাশে আনাচে-কানাচে রাস্তার পাশে বনে জঙ্গলে জন্মানো একটি ভেষজ উদ্ভিদ।একেক অঞ্চলের মানুষ একেক নামে চিনে এই উদ্ভিদকে।এর পাতার রং গাঢ় সবুজ বর্ণের। এবং ফুল সাদা হয়ে থাকে, বিষ কাঁচা অবস্থায় সবুজ বর্ণের হয়ে থাকে। এবং পরিপক্ক হলে কালো রংয়ের হয় ফল মাটিতে পড়ে উপযুক্ত পরিবেশ পেলে বংশবিস্তার করে।
কেশরাজের ফুল দেখতে ছোট প্লেটের এর মত এবং বীজ কালো জিরার মতো ছোট ছোট হয়ে থাকে।সাধারণত কেশরাজ গাছের উচ্চতা ১২ থেকে ২০ ইঞ্চি পর্যন্ত লম্বা হয়। লতানো বেগুনি রংয়ের মতো এর কান্ড হয়ে থাকে।কেশরাজ গাছের শাখা প্রশাখা ভারী হওয়ার কারণে ঝুঁকে থাকে।ভারত উপমহাদেশের সহ বাংলাদেশের সর্বত্র এই উদ্ভিদ জন্মায়।
বাংলাদেশের প্রায় সব অঞ্চলের শাক হিসেবে এর বেশ জনপ্রিয়তা রয়েছে এবং এতে অনেক পুষ্টি উপাদান রয়েছে।এছাড়াও বিভিন্ন চিকিৎসার কাজে ব্যবহার করা হয়ে থাকে এই কেশরাজ গাছ।উদ্ভিদটি দেখতে কালচে রঙের এবং পাতা ও গাছের রস চুলকে ঘন কালো করে এবং চুল পড়া বন্ধ করে,এবং নতুন চুল গজাতে সাহায্য করে ও চুলের গোড়া মজবুত করে তাই অনেকের কাছে কালোকেশী নামে ও পরিচিত।এছাড়াও কেশুতি,কেউরি,কালোকেশী,বাংড়া,কেশরাজ,মইরচর প্রভূতি নামে পরিচিত।
কেশরাজ গাছের ভেষজ ওষধি উপকারিতা
এই উদ্ভিদদের পাতা কাণ্ড ফুল ও ফল ঔষধি গুণসম্পন্ন হিসেবে ব্যবহার করা হয়।এছাড়াও কেশরাজে রয়েছে বিভিন্ন উপাদান লোল্যাকটোন,লিউটেইওলিন,গ্লাইকোসাইড,ট্রিটারপেন,ফাইটেস্টেরল বিদ্যামান।কেশরাজ সর্বত্র হিসাবে ব্যবহার করা হয়ে থাকে।সুতরাং কেশরাজের ভেষজ উপকারিতা সম্পর্কে জেনে নিন।
- ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে কেশরাজ
- লিভারের সুরক্ষায় কেশরাজ
- মাথা ঠান্ডা করনে কেশরাজ
- ক্যান্সার প্রতিরোধে কেশরাজ
- স্নায়ুতন্ত্র সুরক্ষায়
- লিভারের টনিক হিসেবে
- রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি
- কৃমি ও কাশি কমায় কেশরাজ
- কেটে গেলে বা ক্ষত সারাতে কেশরাজ
- মাথা ব্যথা দূর করে কেশরাজ
- ক্যান্সার প্রতিরোধে কেশরাজ
- চুলের যত্নে কেশরাজের ব্যবহার কেশরাজ
- নিরাপদ কীটনাশক হিসাবে কেশরাজ
ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণেঃএক গবেষণায় দেখা গেছে যে,নিয়মিত ২চা চামচ কেশরাজ পাতার রস সেবন করলে ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে থাকে।এছাড়াও কেশরাজ পাতার রস ব্লাড সুগারের মাত্রা কমায় ও গ্লাইকোসাইলেটেড,হিমোগ্লোবিন এর পরিমান কমায় এবং গ্লুজোজ-৬ ফসফেট এবং ফ্রুকটোজ ১,৬ ডাই-ফসফেট এর কার্যকারিতা কমায় এবং লিভারের হেক্রোকিনেজ এর কার্যকারিতা বাড়ায়।
লিভারের সুরক্ষায়ঃ আমাদের দেহে যা কিছুই প্রবেশ করে তা প্রসেস করে আমাদের লিভার। আরে এ কারণে খুব গুরুত্বপূর্ণ অঙ্গ লিভার।আর এই বিশেষ অঙ্গটি নিয়মিত যত্ন না নিলে আপনি অকাল মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়তে পারেন। আপনার যদি লিভারে সমস্যা থাকে তাহলে আপনি কেশরাজ পাতার রস সেবন করতে পারেন। কারণ কেশরাজ পাতায় রয়েছে অ্যামিডোপাইরিন এন-ডিমথাইলিন গ্লুকোজ-৬ ফসফেটের কার্যকারিতা নিয়ন্ত্রণ করে।
আরো পড়ুনঃঅড়হর ডাল খাওয়ার ৭টি উপকারিতা
লিভার এ্যাবসেস,লিভার সিরোসিস,লিভারের প্রদাহ,জন্ডিস দূর করতে সাহায্য করে থাকে।এবং লিভারের টনিক হিসাবে কাজ করে কেশরাজ।প্রতিদিন কেশরাজ পাতার রস ১চা চামচ আধাকাপ পানির সাথে মিশিয়ে সেবন করলে রক্তস্রোত থেকে সব ধরনের ক্ষতিকারক উপাদান বপর করে দিয়ে আমাদের শরীরকে ডিটকিফাই করে।
মাথা ঠান্ডা করনেঃকেশরাজ পাতা ফুল ও ফল এক সাথে বেটে রস তৈরি করে মাথায় ব্যবহার করলে মাথা ঠান্ডা থাকে এবং টেনশন কমায়।এছাড়া ২৫০ এম এল নারিকেল তেলের সাথে এক কাপ পরিমাণ কেশরাজ পাতার কাঁচা রস আমলকি ১টি,জবাফুল ১টি,কারিপাতা ৪থেকে ৫টি,১চা চামচ মেথি দানা এক সাথে মিশিয়ে ফুটিয়ে নিয়ে ঠান্ডা করে পরিষ্কার কাপড় দিয়ে ছেঁকে একটি কাঁচের বোতলে সংগ্রহ করে রাখা যায়।তৈরিকৃত মিশ্রনটি মাথায় মালিশ করলে মাথা ঠান্ডা হয়।চুল পড়া বন্ধ হয়।চুল লম্বা ও কালো হয়।
ক্যান্সার প্রতিরোধেঃইথনোফার্মাকোলজি পত্রিকায় জার্নাল স্টাডিজ দেখায় যে কেশরাজ ক্যান্সার কোষগুলোকে মেরে ফেলতে সক্ষম।এভাবেই ক্যান্সার প্রতিরোধে কেশরাজ অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে থাকে।
স্নায়ুতন্ত্র সুরক্ষায়ঃকেন্দ্রীয় স্নায়ুতন্ত্র সুরক্ষায় সাম্প্রতিক এক গবেষণায় দেখা গেছে যে,কেশরাজের নির্যাস কেন্দ্রীয় স্নায়ুতন্ত্রকে উদ্দীপ্ত করে।
লিভারের টনিক হিসেবেঃকেশরাজ লিভারে টনিক হিসেবে কাজ করে থাকে।এবং লিভারের যেকোনো সমস্যায় কেশরাজ অত্যান্ত গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে থাকে।
রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধিঃকেশরাজ শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়িয়ে দেয়।নিয়মিত কেশরাজ পাতার শাক রান্না করে খেলে শরীরের অনেক পুষ্টি চাহিদা সম্পন্ন হয়।
কৃমি ও কাশি কমায়ঃকেশরাজ পাতা জ্বাল দিয়ে নির্যাস তৈরি করে মায়োকার্ডিয়াল ডেপ্রেস্যান্ট ও হাইপোটেনসিভ এবং কেশরাজের কয়েকটি পাতা বেটে খেলে কৃমি ও কাশি কমাতে অত্যন্ত কার্যকারি।
কেটে গেলে বা ক্ষত সারাতেঃশরীরে কোথাও কেটে গেলে বা ক্ষত স্থান সারাতে কেশরাজ পাতা বেটে পেস্ট বানিয়ে কাটে যাওয়া স্থানে বা ক্ষত স্থানে প্রলেপ লাগালে সঙ্গে সঙ্গে রক্তপাত বন্ধ হয়ে যায় এবং ধীরে ধীরে কাটা স্থানের ক্ষত শুকিয়ে যায়।
মাথা ব্যথা দূর করেঃজীবনে মাথা ব্যথায় ভোগেন নি এমন মানুষ হয়তো খুব কমই আছে।সারাদিন বিভিন্ন কাজকর্ম করার কারণে মাথাব্যথা হয়।এর মধ্যে রয়েছে দুশ্চিন্তা, মাইগ্রেন বা অতিরিক্ত ধূমপান।অতিরিক্ত ব্যথানাশক ওষুধ সেবন করার কারণে শরীরে পানি শূন্যতা হয়ে থাকে।মাথাব্যথা থেকে মুক্তি পেতে কেশরাজ একটি অনন্য ভেষজ মাথা ব্যথা জনিত সমস্যা সমাধানে কেশরাজ পাতার রস দুই ফোটা নাকের ভিতরে ও কপালে মালিশ করলে মাথা ব্যথা দূর হয়।
চুলের যত্নে কেশরাজের ব্যবহারঃকেশরাজের পাতার রস চুলের গোড়ায় লাগান তারপর একটি পাতলা কাপড় দিয়ে মাথায় পেঁচিয়ে রাখুন। ৬০ মিনিট পরে চুল শ্যাপু দিতে ধুতে নিন।সপ্তাহে ২-৩ দিন এই ভাবে ব্যবহার করলে চুল হবে উকুনমুক্ত।
নিরাপদ কীটনাশক হিসাবেঃগবেষণায় দেখা গেছে যে কেশরাজ পরিবেশের কোন প্রতিকূল প্রভাব ছাড়াই মশার লার্ভা প্রসারণ করতে সক্ষম।নিরাপদ কীটনাশক হিসাবে ব্যবহার করার জন্য দু চা চামচ কেশরাজ পাতার কাঁচা রস ৫০০ এম এল পানির সাথে মিশিয়ে আপনার ঘরের ভিতর বাহিরে ইস্প্রে করে মশার আক্রমন হতে রক্ষা পেতে পারেন।
চুলের যত্নে কেশরাজ বা ভৃঙ্গরাজ তেলের ব্যবহার
আমাদের মাঝে অনেকেই আছেন চুলের যত্ন নেওয়ার জন্য নানা ধরনের ঘরোয়া উপায় কাজে লাগাই আবার অনেকে চুলের যত্নে বাজার থেকে নামি দামি হেয়ার প্রোডাক্ট ব্যবহার করে থাকেন।যাতে চুলের সমস্যা কম হয়।চুল তাড়াতাড়ি বাড়ে।কিন্তু আশানুরুপ ফল পান না।চুলের যত্নে কেশরাজ পাতার রস ব্যবহার করতে পারেন।
কেশরাজ পাতার রসে রয়েছে এমন একটি উপাদান যা চুলের যত্নে খুবই কারকারি।আর সেই কারণে নানা হেয়ার প্রোডাক্টে ও কেশরাজের তেল ব্যবহার হয়ে থাকে।এই কেশরাজ বা ভৃঙ্গরাজ তেল আমাদের মাঝে নতুন করে জনপ্রিয় বা পরিচিতি লাভ করে নি।বরং চুল ভালো রাখার জন্যই প্রাচীন কাল থেকেই আমাদের দিদা,ঠাকুমারা ভৃঙ্গরাজ তেল ব্যবহার করে আসছেন।
কেশরাজ বা ভৃঙ্গরাজ তেলের উপকার
আপনাদের মনে প্রশ্ন থাকতে পারে কেশরাজ বা ভৃঙ্গরাজ তেল কি কি উপকার করে?এক নজরে জেনে নিন কেশরাজ তেলের উপকার সম্পর্কে।
- মাথার চুল বাড়াতে সাহায্য করে
- চুল পড়া নিয়ন্ত্রণ করে
- খুশকির সমস্যা সমাধান করে
- চুলের অকালপক্বতা রোধ করে
মাথার চুল বাড়াতে সাহায্য করেঃএকাধিক গবেষণায় দেখা গিয়েছে,কেশরাজ বা ভৃঙ্গরাজ তেল আপনার স্ক্যাল্পে ও চুলের গোড়ায় রক্ত সঞ্চালন বাড়ায়।যা আপনার মাথার চুল বৃদ্ধিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।তাছাড়া ও আপনার চুলের ফলিকলকে সক্রিয় করে তোলে।যা চুলের বৃদ্ধি হয় চোখ পড়ার মতো এবং আকর্ষণীয়।সার্কলার মোশনে অন্তত ১০ মিনিট ভালো করে কেশরাজ তেল মালিশ করতে হবে।এতে ভালো ফল পাবেন আপনি।
চুল পড়া নিয়ন্ত্রণ করেঃবয়স বৃদ্ধির সাথে সাথে আবার হরমন জনিত কারণে।আবার দুশ্চিন্তার কারণে আপনার অত্যাধিক পরিমাণে মাথার চুল পড়ে,তাহলে আপন কেশরাজের তেল ব্যবহার করতে পারেন।কারণ কেশরাজ বা ভৃঙ্গরাজ তেল মাথায় মালিশ করলে মাা ঠান্ডা হয় এবং আপনি মানসিক শান্তি অনুভব করতে পারবেন।কেশরাজ তেলে রয়েছে প্রয়োজনীয় ভিটামিন ও মিনারেল,যা চুল সহজেই চুল পড়া বন্ধ করতে পারে।তাই চুল পড়া সমস্যা সমাধানে আপনি এই ঘরোয়া উপায় কাজে লাগাতে পারেন।
খুশকির সমস্যা সমাধান করেঃআপনার মাথায় যদি খুশকির সমস্যা থাকে,তাহলে কেশরাজ তেল হতে পারে আপনার জন্য একটি কার্যকরি উপাদান। স্ক্যাল্পে ইনফেকশনের কারণেও কিন্তু প্রচুর পরিমাণে চুল পড়ে ফলে স্ক্যাপ্লে চুলকানি ও জ্বালাভাব হতে পারে।অনেক সময় খুশকির সমস্যায় দেখা দেয়।মাথার খুশকি দূর করার জন্য আপনি কেশরাজ বা ভৃঙ্গরাজের তেল ব্যবহার করতে পারেন।কেশরাজ তেলে আছে অ্যান্টি ইনফ্ল্যামেটরি ও অ্যান্টি ফাঙ্গাল উপাদান সমূহ। যা মাথার খুশকির সমস্যা কমাতে সাহায্য করে।এছাড়াও ড্রাই স্ক্যাল্পের ও সমস্যা সমাধান করে থাকে কেশরাজ তেল।
চুলের অকালপক্বতা রোধ করেঃআপনাদের মাঝে অনেকেরই নানা কারণে অল্প বয়সে চুলে পাক ধরতে থাকে।হ্যাঁ,এই কথা ঠিক যে প্রাকৃতিক কারণে একটা সময়ের পর আপনার আমার চুলে পাক ধরবেই।কিন্তু সময়ের আগে যদি চুলে পাক ধরে,তখন স্বাভাবিক ভাবেই মন খারাপ হয়ে যায়।।তাই আপনি চুলের অকালপক্বতা রোধ করতে কেশরাজ বা ভৃঙ্গরাজ তেল ব্যবহার করে পারেন।তাছাড়াও আমলকী তেলের সাথে পরিমান মত কেশরাজ তেল মিশিয়ে একটি তেল বানিয়ে নিতে পারেন।পরিমান মত আপনার স্ক্যাল্পে লাগিয়ে নিন উপকার পাবেন।
কীভাবে মাখবেন কেশরাজ তেল?
ইতিমধ্যেই আপনাদের মাঝে কেশরাজ তেলের উপকারিতা সম্পর্কে জানতে পারছেন।অনেকের মনে প্রশ্ন থাকতে পারে যে কেশরাজ তেল কি ভাবে মাখবেন?বিশেষজ্ঞদের মতানুসারে আপনি সারা রাত কেশরাজ বা ভৃঙ্গরাজ তেল লাগিয়ে রাখতে পারেন।হাতের তালুতে কেশরাজ তেল নিয়ে স্ক্যাল্পে ভালো করে মাসাজ করুন।চুলের গোড়ায় ভালো করে লাগিয়ে নিন।এবং বাকি তেল চুলে মালিশ করে নিন।পরের দিন শ্যাম্পু দিয়ে মাথা ধুয়ে ফেলুন।আর হ্যাঁ,শ্যাম্পু করার ২ঘন্টা পূর্বে কেশরাজ তেল ব্যবহার করলেও উপকার পাওয়া যাবে।
আয়ুর্বেদের মতো কেশরাজ তেলের ব্যবহার
'কমপ্লিট বুক অফ আয়ুর্বেদিক হোম রেমেডিস'বইতে কেশরাজ তেলের ব্যবহার সম্পর্কে বলা আছে।সেখানে নলা হয়েছে যে কেশরাজ বা ভৃঙ্গরাজ তেল রাতে শুতে যাওয়ার সময়েই মাথায় মালিশ করা উচিত।ভালোভাবে স্ক্যাপ্লে ও চুলের গোড়ায় এই তেল মালিশ করা উচিত যার ফলে আপনার হেয়ার ফলিকলকে পুষ্টি যোগান দেবে।এবং আপনার চুলকে সুন্দর ও মজবুত করবে।এক গবেষণায় দেখা গেছে যে ফলিকল ক্ষতিগ্রস্ত হলে চুল পড়া সমস্যা বৃদ্ধি পায়। তাই আয়ুর্বেদের মতানুসারে কেশরাজ তেল ব্যবহার করতে পারেন।
সতর্কীকরণ
ইতিমধ্যেই আপনাদের মাঝে কেশরাজ পাতার রস এবং কেশরাজের তেলের উপকারিতা সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করেছি।প্রত্যক বস্তুর পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া রয়েছে।কেশরাজ যেমন উপকারী তেমনি কেশরাজ ব্যবহারে কিছু পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া রয়েছে।কেশরাজ পাতার রস খাওয়ার পূর্বে অবশ্যই অভিজ্ঞ ডাক্তারের পরামর্শ নেওয়া উচিত।অতিরিক্ত যেকোনো জিনিস সেবন আপনার শরীরের জন্য ক্ষতিকর প্রভাব ফেলতে পারে।
- হার্ট বা কিডনি সমস্যার কারণে কেমোথেরাপি মাধ্যমে যাচ্ছে তারা কেশরাজ ব্যবহার থেকে বিরত থাকবেন।
- কেশরাজ পাতা বা রস সেবন করার পড়ে এলার্জির লক্ষণ দেখা দিলে কেশরাজ খাওয়ানো যাবে না।
- কেশরাজ গর্ভের সন্তানের জন্য বিষাক্ত হতে পারে। এজন্য সন্তানকে বুকের দুধ খাওয়ানোর বয়সে কেশরাজ এড়িয়ে চলা উচিত।
- আপনার রক্তচাপ ইতিমধ্যে কম বেশি হলে বা নিয়ন্ত্রণে না থাকলে।কেশরাজ গ্রহন না করাই ভালো।
- আপনার যদি টাইপ ২ ডায়াবেটিস থাকে,তবে কেশরাজ আপনার জন্য নিরামিষ্ট নয়।সুতরাং এড়িয়ে চলাই উত্তম।
পরিশেষে লেখকের মতামত
আশা করি এই পোস্টটি সম্পূর্ণ পড়ার পর আপনার মনে কোন সংকট বা দ্বিধাবোধ থাকবে না যে কেশরাজ আপনার স্বাস্থ্য ও চুলের জন্য ব্যবহার উপযোগী কিনা তা আপনি বুঝতে পারছেন।যেহেতু কেশরাজ আমাদের বাড়ির আশেপাশেই প্রচুর পরিমাণে পাওয়া যায়।কিনতে আমাদের কোন অর্থ ব্যয় করতে হয় না।তাই যদি বিনামূল্যে এত ঔষধি গুন পাওয়া যায় তাহলে এমন সুযোগ হাত ছাড়া না করাই ভালো।
আজকের এই পোস্টের মাধ্যমে আপনি কেশরাজের স্বাস্থ্যকরী উপকারিতা এবং চুলের যত্নে কেশরাজ তেলের ব্যবহার সম্পর্কে জানতে পারছেন।আমার এই পোষ্টের মাধ্যমে আপনি উপকৃত হয়ে থাকেন তাহলে আপনার বন্ধুদের সাথে শেয়ার করে তাদেরও জানার সুযোগ করে দিন।আরো এমন তথ্যমূলক পোস্ট পেতে এই ওয়েবসাইটটি নিয়মিত ভিজিট করুন ধন্যবাদ।
অর্ডিনারি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url