কোয়েল পাখির ডিমের ১৩টি কার্যকারী উপকারিতা ও অপকারিতা সম্পর্কে জানুন

আপনি কি কোয়েল পাখির ডিম খাওয়ার উপকারিতা ও বাচ্চাদের কোয়েল পাখি ডিম খাওয়ানো উচিত কিনা।অথবা কোয়েল পাখির ডিম খাওয়ার অপকারিতা সম্পর্কে জানতে চান?অনেক ওয়েবসাইটে খোঁজাখুঁজি করেও সঠিক তথ্য পাননি।তাহলে আপনি সঠিক জায়গায় এসেছেন।


আজকে আপনাদের মাঝে কোয়েল পাখির ডিম খাওয়ার উপকারিতা ও বাচ্চাদের কোয়েল পাখি ডিম খাওয়ানো উচিত কিনা, এবং গর্ভাবস্থায় কয়েল পাখির ডিম খাওয়ার উপকারিতা সম্পর্কে সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করব। সুতরাং আজকের এই আর্টিকেলটি মনোযোগ সহকারে পড়ুন।

বিস্তারিত শুরু করার পূর্বে সূচিপত্র দেখে নিনঃ

কোয়েল পাখির বৈশিষ্ট্য

অনেকেই ভাবেন কোয়েল পাখির বৈশিষ্ট্য একই রকম।কিন্তু তা নয়,বিভিন্ন প্রকার জাত অনুসারে কোয়েল পাখির বৈশিষ্ট্য বিভিন্ন রকম হয়ে থাকে।গায়ে বাদামি রঙের ছোট ছোট কোয়েল পাখি দেখতে অনেক সুন্দর লাগে।কোয়েল পাখি খুব দ্রুত বড় হওয়ার কারণে কোয়েল পাখি সাধারণত কম বয়সে ডিম পাড়ে।আনুমানিক ০৬ থেকে ০৭ সপ্তাহ হলেই কয়েল পাখি ডিম দেওয়া শুরু করে।

দীর্ঘদিন পর্যন্ত ডিম দেয় এবং হাঁস মুরগির ডিমের পাশাপাশি শরীরে আমাদের ডিমের চাহিদা পূরণ করে।আপনি কি জানেন বর্তমানে কোয়েল পাখি থেকে মাংস উৎপাদন করা হয় এবং সেটি বাণিজ্যিক ভাবে বাজারজাত করা হয়।সাম্প্রতিক একটি গবেষণায় দেখা গেছে,কোয়েল পাখির মাংসের তুলনামূলক কম ফ্যাট থাকে।

তাই আপনার যদি রক্তচাপ জনিত সমস্যা থাকে তাহলে কোয়েল পাখির মাংস আপনার জন্য খুবই উপকারী।একটি প্রাপ্তবয়স্ক কোয়েল পাখির ওজন ১৫০ গ্রাম থেকে ২০০ গ্রাম পর্যন্ত হয়ে থাকে।এর থেকে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হলো কোয়েল পাখির বাচ্চা ফুটানোর জন্য মাত্র ১৬ থেকে ১৮ দিন সময় লাগে।

যেহেতু কোয়েল পাখির ডিম থেকে বাচ্চা ফোটাতে সময় কম লাগে তাই স্বল্প সময়ে কোয়েল পাখির বাণিজ্য ভাবে বাজারজাত করা হয়।যেহেতু কোয়েল পাখির বাচ্চা ফুটাদের সময় কম লাগে তাই এ থেকে অধিক মুনাফা পাওয়া সম্ভব।

কোয়েল পাখির ডিমের পুষ্টি উপাদান সমূহ

কি ভাবছেন কোয়েল পাখির ডিমের আকৃতির ছোট তাই এর পুষ্টিগুণ কম।মোটেও তা নয় কোয়েল পাখির ডিম ছোট হলেও এর অসম্ভব পুষ্টি গুনাগুন রয়েছে।বর্তমানে বাংলাদেশে হাঁস-মুরগি ডিমের পাশাপাশি নতুন মাত্রায় জনপ্রিয়তা পেয়েছে কোয়েল পাখির ডিম।বাজারে অন্যান্য সকল ডিমের তুলনায় কোয়েল পাখির ডিম সস্তা ও সহজলভ্য।আসুন জেনে নেই একটি কোয়েল পাখির ডিমে কতটা কি কি পুষ্টি উপাদান থাকে।

উপাদানের নাম পরিমাণ
ভিটামিন এ ১%
প্রোটিন ১.২ গ্রাম
ফ্যাট ১ গ্রাম
কোলেস্টেরল ৭৬ মিলিগ্রাম
রিবোফ্লাভিন ৪%
ভিটামিন ১২ ২%
প্যানথোনিক এসিড ২%
আয়রন ২%
সেলেনিয়াম ৪%
ফসফরাফ ২%
ক্যালরি ১৪ মিলিগ্রাম
ওমেগা ৩ ফ্যাটি এসিড ৪ মিলিগ্রাম
ওমেগা ৬ ফ্যাটি এসিড ৮৪ মিলিগ্রা

 আনুমানিক পুষ্টি উপাদানের তালিকা (প্রতি ৫টি কোয়েল পাখির ডিম )

পুষ্টি উপাদান পরিমাণ ( আনুমানিক ) দৈনিক চাহিদা পূরণের শতাংশ ( আনুমানিক )
ক্যালরি ৭১ ৩.৫৫%
প্রোটিন ৬ গ্রাম ১২%
মোট চর্বি ৫ গ্রাম ৭.৬৯%
আয়রন ১.৬৫ মিলিগ্রাম ৯.১৭%
ভিটামিন বি ১২ ০.৬৪ মাইক্রোগ্রাম ২৬.৬৭%
ভিটামিন এ ১২৫ আইইউ ২.৫%

কোয়েল পাখি ডিম খাওয়ার উপকারিতা

দেশী ও ফার্মের মুরগির ডিমের পাশাপাশি এখন কোয়েল পাখির ডিম খাওয়ার প্রচলন বেশ বেড়েছে। তাই মানুষের ডিমের চাহিদা মেটাতে হাঁস মুরগি ডিমের পাশাপাশি এখন কোয়েল পাখির ডিম খামারের মাধ্যমে এবং গ্রাম অঞ্চলে উৎপাদন করা হয়।যার ফলে কোয়েল পাখির ডিম এখন বেশ সহজলভ্য হয়েছে।এখন এলাকার ছোট বড় বাজার সহ সুপার শপ সবগুলোতেও কোয়েল পাখির ডিম পাওয়া যায়।


কোয়েল পাখির ডিম আকারে ছোট হলেও এর গুনাগুন পরিমাণে ভিটামিন এ, ভিটামিন বি, ভিটামিন বি৬,রিবোফ্লাভিন, আইরন,ওমেগা থ্রি ফ্যাট, ওমেগা সিক্স ফ্যাট এবং উচ্চমাত্রায় প্রোটিন উপাদান। একটি কোয়েল পাখির ডিম থেকে প্রায় ৮ গ্রাম প্রোটিন পাওয়া যায়।যা আমাদের শরীরের প্রোটিনের ঘাটতি পূরণ করতে সহায়তা করে।

ত্বক উজ্জল ও মসৃণ করেঃসুন্দর ত্বক পছন্দ করেন না এমন মানুষ খুঁজে পাওয়া খুবই মুশকিল।ছেলে হোক বা মেয়ে প্রত্যেকেই সুন্দর উজ্জ্বল ও মসৃন ত্বক পেতে চায়।সুন্দর উজ্জল ত্বক পেতে আপনি প্রতিদিন কোয়েল পাখির ডিম খেতে পারেন।কারণ কোয়েল পাখি ডিমে পাওয়া যায় প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন বি, ও ভিটামিন বি ৬,যা আমাদের ত্বকে মুসৃন করে এবং সুন্দর রাখে।

আমাদের মাঝে অনেকেই আছেন যাদের শীতকালে ত্বক উসকে শুষ্ক প্রাণহীন হয়ে যায়।ত্বকের এই উসকে শুষ্ক প্রাণহীন ভাব দূর করতে আপনি প্রতিদিন দুই থেকে তিনটি কোয়েল পাখির ডিম খাবেন। এতে আপনি ভালো উপকার পাবেন।এছাড়াও কোয়েল পাখির ডিম খেলে আপনার ত্বক সুন্দর হওয়ার পাশাপাশি আপনার চুল হবে স্ট্রং এবং আকর্ষণীয়।যা আপনার ব্যক্তিগত সৌন্দর্যকে আরো বৃদ্ধি করবে।

চুল পড়া রোধ করেঃআপনি কি অতিরিক্ত চুল পড়ার সমস্যায় ভুগছেন?বাজার থেকে বিভিন্ন রকম হেয়ার প্রোডাক্ট ব্যবহার করার পরও কোন কিছুতেই আপনার চুল পড়া কমছে না?বর্তমান সময়ে চুল পড়া একটি সাধারণ সমস্যা হয়ে দাঁড়িয়েছে।চুল পড়া সমস্যায় ভুগছে না এমন মানুষ খুঁজে পাওয়া খুবই মুশকিল।কারণ বর্তমান সময়ে আমরা প্রত্যেকেই একই সমস্যার ভুক্তভোগী।

আমাদের অস্বাস্থ্যকর জীবন যাপন এবং অস্বাস্থ্যকর খাবারের ফলে অকালে চুল পড়ার সমস্যা দেখা দেয়।চুল পড়া এই সমস্যা থেকে মুক্তি পেতে দুই থেকে তিনটি কোয়েল পাখির ডিম খেতে পারেন।কারণ কোয়েল পাখির ডিমের থেকে উচ্চমাত্রায় প্রোটিন পাওয়া যায়।যা আপনার চুল পড়াকে রোধ করে এবং চুলকে স্ট্রং ও মজবুত করতে সহায়তা করে।

হার্টে স্বাস্থ্য সুরক্ষায় সাহায্য করেঃঅনেকেই আছেন বিভিন্ন রকম হার্টের সমস্যায় ভুগে থাকেন।হার্ট আমাদের শরীরের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ অংশ।তাই হার্টের যত্ন নেওয়া আবশ্যক।হার্টের কাজ হল আমাদের শরীরের সমস্ত বিষাক্ত পদার্থগুলোকে বর্জ্য পদার্থের রূপান্তরিত করা এবং রক্তকে পরিশোধিত করা যার ফলে আমাদের শরীর সুস্থ রাখা।আর আমাদের হার্ট যদি কোন ভাবে তার কার্যক্ষমতা হারিয়ে ফেলে তাহলে আমাদের শরীর সম্পূর্ণ অচল হয়ে পড়বে।

এজন্যই হার্টের যত্ন নেওয়া আমাদের প্রত্যেকেরই আবশ্যক।আপনি যদি আপনার হার্ট কে ভালো রাখতে চান এবং সকল ধরনের হার্টের রোগ থেকে দূরে রাখতে চান।তাহলে আপনি নিয়মিত দুই থেকে তিনটি কোয়েল পাখির ডিম সিদ্ধ করে খাবেন।কোয়েল পাখির ডিমে পটাশিয়াম পাওয়া যায় যা আমাদের হার্টের কার্যক্ষমতা কে বৃদ্ধি করে এবং হার্টের স্বাস্থ্য সুরক্ষায় সহায়তা করে।

ক্যান্সার প্রতিরোধেঃকোয়েল পাখির ডিমে প্রাপ্ত খনিজ উপাদান গুলোর একটি হলো সেলেনিয়াম।এই খনিজ দ্রব্যটি প্রোস্টেট ক্যান্সারের মতো প্রাণঘাতি রোগের ঝুঁকি কমাতে সাহায্য করে।সেলেমিয়ামে রয়েছে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট যা আমাদের দেহকোষকে ক্ষয় হয়ে যাওয়া এবং জারণ থেকে রক্ষা করে।

এছাড়াও এইচ আই ভি ও ক্রন'স আক্রান্ত মানুষের দেহে সেলেনিয়ামের অভাব লক্ষণ করা যায়। স্বাভাবিক মানুষের শরীরে সেলেনিয়ামের ঘাটতি পরিলক্ষিত না হলেও প্রতিদিনের খাদ্যাভাসে সেলেনিয়াম যুক্ত খাদ্য রাখাটা স্বাস্থ্যের পক্ষে ভাল।সুতরাং এক্ষেত্রে কোয়েল পাখির ডিম অনেক সহায়তা করতে পারে।

কিডনি ভালো রাখেঃকোয়েল পাখির ডিম আকারে ছোট হলেও এর পুষ্টিগুণ কিন্তু অনেক।এটি আমাদের হার্টকে সুস্থ রাখার পাশাপাশি কিডনিকে ও ভালো রাখতে সহায়তা করে।কিডনি আমাদের শরীরের সবচেয়ে ভারী এবং গুরুত্বপূর্ণ অঙ্গের মধ্যে একটি।কিডনি আমাদের শরীরে একপ্রকার ছাঁকনি বিশেষ যা আমাদের রক্তকে পরিষ্কার রাখে।

আপনি আপনার কিডনিকে সুস্থ রাখতে এবং কিডনির কার্যক্ষমতাকে বৃদ্ধি করতে নিয়মিত কোয়েল পাখির ডিম খেতে পারেন।কোয়েল পাখির ডিমে রয়েছে এমন কিছু পুষ্টি ও ভিটামিন উপাদান যা আমাদের কিডনিকে ভালো রাখে এবং কিডনির কার্যক্ষমতাকে বৃদ্ধি করতে অনেক সহায়তা করে।

রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করেঃরোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা আমাদের শরীরের সকল ধরনের রোগের সাথে যুদ্ধ করে আমাদের শরীরকে সুস্থ রাখতে সহায়তা করে।রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কমে যায় তাহলে আমাদের শরীর ধীরে ধীরে দুর্বল হয়ে পড়ে।

আর এর জন্যই এখন থেকে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতাকে বৃদ্ধি করতে প্রতিদিন দুই থেকে তিনটি সিদ্ধ অথবা হাফ বয়েল কোয়েল পাখির ডিম খেতে পারেন।কোয়েল পাখির ডিমের থাকে প্রচুর পুষ্টিকর উপাদান যা আপনার শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতাকে বৃদ্ধি করতে সহায়তা করবে এবং শরীরে পুষ্টি যোগাবে এবং শরীরকে সুস্থ রাখবে।

কোলেস্টেরল নিয়ন্ত্রণ করেঃআমাদের মাঝে অনেকেই আছেন যারা শরীরে কোলেস্টেরল নিয়ে অনেক বেশি চিন্তিত থাকেন।হয়তো মনে মনে ভাবছেন কিভাবে কোলেস্টেরল কমানো যায় বা নিয়ন্ত্রণ করা যায়।আপনি আপনার কোলেস্টেরল নিয়ন্ত্রণে রাখতে কোয়েল পাখির ডিম খেতে পারেন।

কারণ কোয়েল পাখির ডিমে কোলেস্টেরলের পরিমাণ ১.৪% যা মুরগির ডিমের তুলনায় সাত ভাগের এক ভাগ।সুতরাং যে সকল মানুষের কোলেস্টেরল পরিমান বেশি করে তাদের জন্য কোয়েল পাখির ডিম খাওয়া উত্তম।

ওজন কমাতে সাহায্য করেঃআমাদের মাঝে অনেকেই আছেন যারা মনে করেন ডিম খেলে ওজন বৃদ্ধি পায়।ডিম খেলে ওজন হ্রাস পাই ফলে ডিম খেলে আমাদের পেট ভার হয়ে থাকে ফলে তেমন ক্ষুদা পাই না।এতে আপনার ওজন হ্রাস পায়।আপনি কি আপনার ওজন নিয়ে চিন্তিত,তাহলে আপনি প্রতিদিন দুই থেকে তিনটি করে কোয়েল পাখির ডিম খাবেন।কোয়েল পাখির ডিমে থাকে যৌগিক পুষ্টি উপাদান সমূহ আপনার ওজন হ্রাস করতে সহায়তা করবে।

চোখের জ্যোতি ভালো রাখেঃআপনার কি কাছের জিনিস অথবা দূরের জিনিস দেখতে সমস্যা হয়? এরূপ সমস্যা থাকলে আপনি নিয়মিত দুই থেকে তিনটি কোয়েল পাখির ডিম সিদ্ধ করে খাবেন। কোয়েল পাখির ডিম থেকে পরিপূর্ণ পুষ্টি পাওয়া সম্ভব।কোয়েল পাখির ডিম রয়েছে ভিটামিন এ এর ভালো উৎস।

যা সরাসরি আমাদের চোখের জ্যোতিকে বৃদ্ধি করতে সহায়তা করে এবং চোখ সংক্রান্ত যাবতীয় সমস্যা কে দূর করতে সহায়তা করে।ভিটামিন এ অল্প আলোয় চোখকে দেখতে সহায়তা করে এবং অন্ধত্ব প্রতিরোধ করে।এছাড়াও ভিটামিন এ চোখের কর্নিয়া ও অন্য সকল অংশে পুষ্টি দেয়।এর ফলে বাচ্চাদের রাতকানা রোগ হয় না।

শক্তিবর্ধকঃকোয়েল পাখির ডিম আমাদের শরীরের জন্য বেশ ভালো একটি শক্তির উৎস হতে পারে। কোয়েল পাখির ডিমে রয়েছে প্রোটিন ও আয়রনের সমৃদ্ধ যা আমাদের শরীরের এনার্জি লেভেল বাড়িয়ে দিতে বিশেষ ভূমিকা রাখে।সব ধরনের প্রোটিন বহু অ্যামিনো এসিড অণুর দ্বারা তৈরি চেইন দিয়ে গঠিত হয়।কোয়েল পাখির ডিম অ্যামাইনো অ্যাসিড প্রোফাইল তৈরি করতে দেখা যায়।

এটি বেশ গুরুত্বপূর্ণ কিছু এমন অ্যাসিড বিদ্যমান এছাড়াও শরীরের ব্লাড সুগার নিয়ন্ত্রণে এদের মধ্যে কয়েকটি অ্যামাইনো এসিড বেশ কার্যকরী ভূমিকা পালন করে।অন্য কয়টি অ্যামাইনো এসিড রয়েছে যারা টিস্যুর ক্ষয়রোধ ও নতুন টিসু গঠন করে।এছাড়া ও কোয়েল পাখির ডিমে পাওয়া যায় লাইসিন নামক অ্যামাইনো এসিড থাকে।

যা আমাদের শরীরের অ্যান্টিবডি তৈরিতে এবং হরমোন,কোলাজেন ও এনজাইম উৎপাদনে ভূমিকা রাখে।নতুন রক্ত তৈরিতে আয়রনের ভূমিকা বেশ তাৎপর্যবহ।শরীরের আয়রনের অভাব রক্তস্বল্পতা দেখা দেয় যার ফলে ঘনঘন ক্লান্তি ও শ্বাস-প্রশ্বাসের অসুবিধা দেখা যায়। এ সকল সমস্যার সমাধানে আপনি নিয়মিত দুই থেকে তিনটি কোয়েল পাখির ডিম সিদ্ধ করে খেতে পারেন এতে ভালো উপকৃত হবেন।

মস্তিষ্ক এবং সায়ুতন্ত্রের সুস্থতা নিশ্চিতঃআমাদের মস্তিষ্কের কার্যকলাপ ও সামগ্রিক স্বাস্থ্যের জন্য ভিটামিন বি১২, থাইমিন ভিটামিন বি১ ও ভিটামিন বি২ বেশ গুরুত্বপূর্ণ।প্রয়োজনীয় পরিমাণে ভিটামিন বি১২ আমাদের স্মৃতিশক্তি ক্ষয় রোধ করত সহায়তা করে।কোয়েল পাখির ডিমে ভিটামিন বি ১২ এবং রিবোফ্লাভিন বি ১২ এর একটি ভালো উৎস যা আমাদের মস্তিষ্ক এবং স্নায়ুতন্ত্রের সুস্থতা নিশ্চিত করতে কোয়েল পাখির ডিমের বিদ্যমান পুষ্টি সমূহ সহায়তা করে থাকে।

এলার্জিজনিত রোগ প্রতিরোধ করেঃবর্তমানে পরিবেশ দূষণের মাত্রা বেড়ে যাওয়ার কারণে অনেকেই এলার্জির জনিত রোগের আক্রান্ত হচ্ছেন।আপনার যদি এলার্জি জনিত কোন সমস্যা থাকে তাহলে আপনি নিয়মিত কোয়েল পাখির ডিম খেতে পারেন।এক গবেষণায় দেখা গিয়েছে,কোয়েল পাখির ডিম রয়েছে এলার্জি প্রতিরোধকারী উপাদান।কোয়েল পাখির ডিম এলার্জির লক্ষণ ও মাত্রা কমিয়ে দিতে পারে।

হাঁপানি শিথিল করেঃকোয়েল পাখির ডিমে এলার্জি প্রতিরোধকারী উপাদান হাঁপানির বিরুদ্ধেও কাজ করে।ধুলোবালির জীবাণুতে সংক্রান্ত ১৮০ জন শিশুকে নিয়ে করা একটি গবেষণায় দেখা গিয়েছে,যে সকল শিশু বাচ্চারা কোয়েল পাখির ডিম খেয়েছে তাদের হাঁপানি তীব্রতা ও অস্থিরতা উল্লেখযোগ্য হারে কম।

শিশু বাচ্চাদের জন্য কোয়েল পাখির ডিম খাওয়ার উপকারিতা

আপনি কি আপনার শিশু বাচ্চাকে কোয়েল পাখির ডিম খাওয়ানো নিয়ে বেশ চিন্তিত?তাহলে আজকের এই আর্টিকেলের অংশটুকু দেখা আপনার জন্য অত্যন্ত জরুরী।ইতিমধ্যে আপনাদের মাঝে কোয়েল পাখির ডিম খাওয়ার উপকারিতা সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করেছি।আর্টিকেলের এই অংশে শিশু বাচ্চাদের জন্য কোয়েল পাখি ডিম খাওয়ার উপকারিতা সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করব। 


হাড় ও পেশি মজবুত করেঃ শিশু বাচ্চাদের হাড় ও পেশি দুর্বল হয়ে থাকে।এজন্য শিশু বাচ্চাদের কোয়েল পাখির ডিম খাওয়াতে হবে।এতে করে তাদের হাড় ও পেশি দ্রুত মজবুত হবে।কোয়েল পাখির ডিমে থাকা প্রচুর পরিমাণে যৌগিক পুষ্টির উপাদান সহ ভিটামিন ডি ও ক্যালসিয়াম পাওয়া যায়।

যা শিশু বাচ্চার শরীরের এনার্জি যোগায় এবং শিশু বাচ্চার হাড় ও পেশিকে মজবুত ও স্ট্রং করতে সহায়তা করে।এজন্য আপনি আপনার শিশু বাচ্চার হাড় ও পেশির যত্ন নিতে দুই থেকে তিনটি সিদ্ধ করে নিয়মিত কোয়েল পাখির ডিম খাওয়াবেন।

শিশু বাচ্চাদের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করেঃআপনি কি আপনার শিশু বাচ্চার রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি নিয়ে বেশ চিন্তিত? শিশু বাচ্চাদের শরীর অনেক দুর্বল হওয়ার কারণে শিশু বাচ্চাদের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা প্রাপ্তবয়স্কদের তুলনায় অনেকাংশে কম হয়ে থাকে।যার ফলে শিশু বাচ্চারা দ্রুতই যেকোনো রোগে আক্রান্ত হয়ে পড়ে।


তাই শিশু বাচ্চাদের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করা খুবই জরুরী।সুতরাং রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করতে চাইলে।নিয়মিত আপনার শিশু বাচ্চাকে দুই থেকে তিনটি কোয়েল পাখির ডিম সিদ্ধ করে খাওয়াতে হবে।কোয়েল পাখির ডিমে থাকা পুষ্টি উপাদান সমূহ আপনার শিশু বাচ্চার শরীরের এনার্জি নিয়ে আসবে এবং শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করতে সহায়তা করে।
 
শিশু বাচ্চাদের মস্তিষ্কের বিকাশ ঘটায়ঃশিশু বাচ্চাদের জন্য আমরা কত কিছুই না করে থাকি এটা ওইটা খাওয়াতেই থাকি।আবার অনেকেই আছেন শিশু বাচ্চাদের মস্তিষ্ক বিকাশের জন্য ফার্মেসি থেকে বিভিন্ন ধরনের ভিটামিন খাওয়াতে ও দেখা যায়।কিন্তু কোন কিছুতেই কাজে আসে না।

সাম্প্রতিক এক গবেষণায় দেখা গিয়েছে,শিশু বাচ্চাদের মস্তিষ্ক বিকাশের জন্য কোয়েল পাখির ডিমে থাকা পুষ্টি ও উপাদান সমূহ শিশু বাচ্চাদের দ্রুত বিকাশ ঘটায় এবং উচ্চ সুবুদ্ধি সম্পন্ন হয়।তাই শিশু বাচ্চাদের মস্তিষ্ক বিকাশের জন্য নিয়মিত দুই থেকে তিনটি কোয়েল পাখির ডিম খাওয়াতে হবে।

শিশু বাচ্চাদের দৃষ্টিশক্তি উন্নতি করেঃআপনি কি আপনার শিশু বাচ্চার দৃষ্টিশক্তি উন্নতি করতে নিয়মিত দুই থেকে তিনটি কোয়েল পাখির ডিম খাওয়াতে পারেন।কোয়েল পাখির ডিমে থাকা পুষ্টি ও ভিটামিন এ এবং ওমেগা থ্রি ফ্যাট পাওয়া যায়।যা সরাসরি শিশু বাচ্চাদের দৃষ্টিশক্তিকে উন্নতি করতে সহায়তা করে।

খাওয়ার উপযোগী এমন কিছু এমন সমস্ত ডিম শিশু বাচ্চাদের শরীরের জন্য অনেক বেশি গুরুত্বপূর্ণ।তবে কোয়েল পাখির ডিম খাওয়ার উপযোগীর চেয়ে ভিটামিন ও গুণসম্পন্ন তাই শিশু বাচ্চাদের কোয়েল পাখির ডিম খাওয়াবেন।

সতর্কীকরণ
  • যে সকল বাচ্চাদের বয়স ০৯ থেকে ০১ বছর ওই সকল বাচ্চাদের সপ্তাহে ০২ থেকে ০৩ দিন। এক থেকে দুটি করে কোয়েল পাখির ডিম খাওয়ানো উচিত।
  • এক থেকে তার বেশী বয়সী বাচ্চাদের দিনে দুই থেকে তিনটি ডিম খাওয়ানো উচিত। 
  • যেদিন কোয়েল পাখির ডিম বাচ্চাদের খাবেন ওই দিন অন্য কোন দিন খাওয়ানো যাবে না।
  • অতিরিক্ত কোয়েল পাখির ডিম খাওয়া থেকে শিশু বাচ্চাকে বিরত রাখুন।এতে করে ডায়রিয়া হওয়ার সম্ভাবনা থাকে।এছাড়াও কোন পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া দেখা দিলে তাৎক্ষণিক অভিজ্ঞ ডাক্তারের পরামর্শ নিবেন।

গর্ভাবস্থায় কয়েল পাখির ডিম খাওয়ার উপকারিতা

আপনি যদি একজন গর্ভবতী মহিলা হয়ে থাকেন অথবা আপনার স্ত্রী অথবা আপনার পরিবারের কেউ, তাহলে আজকের এই আর্টিকেলের অংশটুকু দেখা আপনার জন্য অত্যন্ত জরুরী।এখন গর্ভাবস্থায় কোয়েল পাখির ডিম খাওয়ার উপকারিতা সম্পর্কে জানাবো।আমাদের মাঝে অনেকেই আছেন এই বিষয়টি সম্পর্কে জানেন না।চলুন তাহলে আর দেরি না করে জেনে নেই গর্ভাবস্থায় কয়েল পাখির ডিম খাওয়ার উপকারিতা সম্পর্কে।


গর্ভবতী নারীদের কতটুকু খাবার খেতে হবে তা একটু চিন্তার বিষয়।নারীদের গর্ভাবস্থায় প্রায় সব খাবার খাওয়ার খুব বেশি ইচ্ছে জাগে যা স্বার্থের জন্য ক্ষতিকর।তাই এ সময় নিজেকে ক্ষতিকর খাবার গুলো থেকে বিরত রাখতে হবে।কেননা গর্ভাবস্থায় স্বার্থকর খাবার খেলে মা ও গর্ভে থাকা শিশু সুস্থ থাকে। গর্ভাবস্থায় মায়েদের প্রচুর পুষ্টি প্রয়োজন হয় আর এই পুষ্টির চাহিদা পূরণের জন্য ডিম অতুলনীয়।

তাই গর্ভাবস্থায় প্রতিদিনের খাদ্য তালিকায় ডিম রাখা প্রয়োজন।অন্যান্য ডিমের চেয়ে গর্ভাবস্থায় কোয়েল পাখির ডিম খাওয়ার উপকারিতা গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।কোয়েল পাখির ডিম বিভিন্ন পুষ্টি গুণাগুনে অতুলনীয়।গর্ভাবস্থায় একটি মায়ের যে পরিমাণ ভিটামিন, অ্যামাইনো এসিড, খনিজ উপাদান, এবং মিনারেল প্রয়োজন হয় তা সবগুলোই কোয়েল পাখির ডিমের পাওয়া যায়।

অন্যান্য ডিমের থেকে কয়েল পাখির ডিমের ভিটামিন বি১ অনেক বেশি পরিমাণে রয়েছে।এছাড়া অন্যান্য ডিমের তুলনায় কোয়েল পাখির ডিমে ফসফরাস ও আয়রন এর পরিমাণ পাঁচ গুণ বেশি থাকে। বর্তমান বাজারে কোয়েল পাখির ডিম খুব সস্তা যা ধনী গরিব সকলে কিনে খেতে পারে।স্বল্পমূল্যে কোয়েল পাখির ডিম পাওয়া যায় বলে এ ডিমের চাহিদাও প্রচুর।

গর্ভাবস্থায় গর্ভবতী মা কোয়েল পাখির ডিম নিয়মিত সিদ্ধ করে খেলে শিশুর শারীরিক ও মানসিক বিকাশ বৃদ্ধিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে।গর্ভাবস্থায় গর্ভবতী মায়ের ক্যালরির প্রয়োজন হয়।কোয়েল পাখির ডিম খেলে গর্ভবতী মায়ের ক্যালরির ঘাটতি পূরণ হয়।এছাড়াও কয়েল পাখি ডিমের প্রচুর পরিমাণে পটাশিয়াম থাকায় গর্ভাবস্থায় উচ্চ রক্তচাপকে প্রতিরোধ করে মা ও শিশুকে ভালো রাখে।

কোয়েল পাখির ডিমে কোলেস্টেরলের পরিমাণ ১.৪% যা মুরগির ডিমের তুলনায় সাত ভাগের এক ভাগ। গর্ভাবস্থায় নিজের উপর অবহেলা না করে এই সময়টাতে আপনি আপনার যত্ন ভালো করে নিবেন। মনে রাখবেন,আপনার পেটে থাকা সন্তানের ভালো থাকাটা আপনার উপর নির্ভরশীল।সুতরাং আপনি নিজের উপর যত্নশীল হলে আপনার গর্ভে থাকা সন্তান ভালো ও সুস্থ থাকবে।তবে গর্ভাবস্থায় কোয়েল পাখির ডিম খাওয়ার পূর্বে অবশ্যই অভিজ্ঞ ডাক্তারের পরামর্শ নিয়ে খাবেন।

কোয়েল পাখির ডিম খাওয়ার অপকারিতা /ক্ষতির দিক গুলো

আমাদের দেশে হাঁস-মুরগির ডিমের পাশাপাশি কোয়েল পাখি ডিমের জনপ্রিয়তা অনেক বেশি।বিভিন্ন অঞ্চলে হাটে বাজারে কোয়েল পাখির ডিম সিদ্ধ করে বিক্রি করতে দেখা যায়।কোয়েল পাখির ডিম খেতে যেমন সুস্বাদু তেমনি এটির হাজার পুষ্টিগুণ ও উপকারিতা ভরপুর।ছোট বড় সব বয়সী মানুষ কোয়েল পাখি ডিম খেতে ভালোবাসে।


ইতিমধ্যে আপনাদের মাঝে গর্ভাবস্থায় কোয়েল পাখির ডিম খাওয়ার উপকারিতা সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করেছি।তবে এতো সব উপকারিতার মাঝেও কোয়েল পাখি ডিম খাওয়ার কিছু অপকারিতা রয়েছে।কথায় আছে অতিরিক্ত কোন কিছুই আমাদের স্বাস্থ্যের জন্য ভালো না।আসুন তাহলে জেনে নেই কোয়েল পাখির ডিম খাওয়ার অপকারিতা সম্পর্কে।

ডায়াবেটিস ও হৃদরোগ সমস্যার কারঃ আপনার যদি ডায়াবেটিস ও হৃদরোগ জনিত কোন সমস্যা থেকে থাকে অথবা আপনার যদি ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণের বাইরে থাকে।তাহলে এক্ষেত্রে কয়েল পাখির ডিম খাওয়া থেকে বিরত থাকা আপনার জন্য উত্তম।কারণ কোয়েল পাখির ডিমে প্রচুর পরিমাণে ফ্যাট আছে।এই ফ্যাট ডায়াবেটিস রোগীদের সমস্যার কারণ হতে পারে।

কোলেস্ট্রলের সমস্যা বাড়ায়ঃএকটি গবেষণায় দেখা গিয়েছে,কোয়েল পাখির ১০০ গ্রাম ডিমের প্রায় ৮৮৪ গ্রাম কোলেস্টোর থাকে।যা হাঁস-মুরগি ডিমের থেকেও অনেক বেশি।তাই যাদের কোলেস্টেরলের সমস্যা বেশি তাদের কোয়েল পাখির ডিম  পরিহার করা উচিত।

এছাড়াও অতিরিক্ত কোয়েল পাখির ডিম খেলে আরো যেসব সমস্যা দেখা দিতে পারে এক নজরে তা দেখে নিন
  • অতিরিক্ত কোয়েল পাখির ডিম খাওয়ার ফলে ত্বকের অথবা চুলকানির সমস্যা দেখা দিতে পারে। যেমন বিভিন্ন জায়গায় লাল লাল ফুসকুড়ি।
  • অতিরিক্ত কোয়েল পাখির ডিম খেলে মাথা গরম হয়ে ওঠে। এর ফলে অতিরিক্ত ঘাম হতে পারে যার ফলে পানি শূন্যতা দেখা দেয়।
  • উচ্চ রক্তচাপ জনিত সমস্যা দেখা দিতে পারে।
  • হজম শক্তিতে সমস্যা সৃষ্টি করতে পারে।
  • পেট ব্যথা অথবা পেট খারাপ হতে পারে।

আশা করি উপরিক্ত আলোচনা থেকে আপনি বুঝতে পারছেন যে,অতিরিক্ত কোয়েল পাখির ডিম খাওয়ার ফলে কি কি সমস্যা দেখা দেয়।তবে আপনি যদি পরিপূর্ণ নিয়ম মেনে কোয়েল পাখির ডিম খান তাহলে এরূপ সমস্যায় পড়বেন না।

কোয়েল পাখির ডিম প্রতিদিন কয়টা খাওয়া উচিত

আশা করি উপরিক্ত আলোচনার মাধ্যমে আপনি নিশ্চয়ই বুঝতে পারছেন যে,কোয়েল পাখির ডিম থেকে হাজার পুষ্টিগুণ ও ভিটামিন সহ, খনিজ উপাদান এবং ক্যালরি পাওয়া যায়।তবে কোয়েল পাখির ডিম খাওয়ার কিছু সুনির্দিষ্ট নিয়ম রয়েছে যা আমাদের মাঝে অনেকেই জানেন না।আর্টিকেলের এই অংশে কোয়েল পাখির ডিম প্রতিদিন কয়টা খাওয়া উচিত এ সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করব।

 বিজ্ঞানীরা বলেন কোয়েল পাখির ডিম সব সময় সিদ্ধ করে খাওয়া উচিত।কারণ কোয়েল পাখির ডিম যখন ভাজি করা হয় তখন তার সম্পূর্ণ পুষ্টিগুণ ও ভিটামিন গুলো নষ্ট হয়ে যায়।এজন্য কোয়েল পাখির ডিম হাফ ওয়েল করে খেতে হবে তাহলে কোয়েল পাখির ডিমের পরিপূর্ণ পুষ্টি পাওয়া যাবে।তবে কোয়েল পাখির ডিম প্রতিদিন ২ থেকে ৩ টি খাওয়া উচিত।

এর বেশি খেলে শরীরে বিভিন্ন এলার্জি জনিত সমস্যা দেখা দিতে পারে।কোয়েল পাখির ডিম আকারে ছোট হলেও এতে মুরগির ডিমের চেয়ে ৭ থেকে ৮ গুণ বেশি প্রোটিন পাওয়া যায়।সুতরাং উচ্চ প্রোটিন সম্পন্ন হওয়ায় এটি অধিক খাওয়ার ফলে শরীরে এলার্জি জনিত সমস্যা দেখা দিতে পারে।এজন্য চেষ্টা করবেন প্রতিদিন দুই থেকে তিনটি করে কোয়েল পাখির ডিম খেতে।এতে আপনার শরীর সুস্থ থাকবে এবং আপনার শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি পাবে।

কোয়েল পাখির মাংসের উপকারিতা

আপনি কি কোয়েল পাখির ডিমের পাশাপাশি কোয়েল পাখির মাংস খাওয়ার কথা ভাবছেন।বর্তমানে বাণিজ্যিক ভাবেই কোয়েল পাখির মাংস বাজারজাত করা হয়।আর্টিকেলের এই অংশে কোয়েল পাখির মাংস খাওয়ার উপকারিতা সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করব।
  • আপনি যদি হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে থাকেন তাহলে আপনার জন্য কোয়েল পাখির মাংস অনেক উপকারী।কারণ কোয়েল পাখির মাংসে ফ্যাট কম থাকে।
  • কোয়েল পাখির মাংসে বিভিন্ন ধরনের ভিটামিন রয়েছে যা আমাদের দেহের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করে এবং আমাদের দেহকে সুস্থ সবল রাখে।
  • অন্যান্য পাখি বা মুরগির তুলনায় কোয়েল পাখির মূল্য কম।তাই নিম্ন আয়ের মানুষও কোয়েল পাখির মাংস কিনে খেতে পারেন।
  • হাঁস-মুরগি মাংসের থেকে কোয়েল পাখির মাংস নরম হয়।যা সহজে খাওয়া যায় এবং দ্রুত হজমের সাহায্য করে।
  • কোয়েল পাখির মাংস আমাদের শারীরিক দুর্বলতা দূর করতে সহায়তা করে।
  • আপনার যদি ডায়াবেটিস থাকে তাহলে আপনার জন্য কোয়েল পাখির মাংস খুবই উপযোগী।

পরিশেষে লেখকের মন্তব্য

প্রিয় পাঠক সম্পূর্ণ আর্টিকেলটি পড়ে আশা করি কোয়েল পাখির ডিম খাওয়ার উপকারিতা ও বাচ্চাদের কোয়েল পাখির ডিম খাওয়ার উপকারিতা এবং গর্ভাবস্থায় কোয়েল পাখির ডিম খাওয়ার উপকারিতা সম্পর্কে আপনাদের একটি স্পষ্ট ধারণা দিতে সক্ষম হয়েছি।সুতরাং আর্টিকেলটি পড়ে আপনার মাঝে কোন সংশয় থাকবে না যে কোয়েল পাখি ডিম খাওয়া আপনার জন্য উপকারী নাকি আপনার স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতি হতে পারে এ বিষয়ে।

তবে গর্ভাবস্থায় যে কোন কিছু খাওয়ার পূর্বে অবশ্যই অভিজ্ঞ ডাক্তারের পরামর্শ নিয়ে খাওয়া উচিত। আজকের এই আর্টিকেলের মাধ্যমে আপনি যদি উপকৃত হয়ে থাকেন।তাহলে অবশ্যই আপনার বন্ধুদের সাথে শেয়ার করে তাদের জানার সুযোগ করে দিবেন।এবং আপনি আপনার মতামত কমেন্ট এর মাধ্যমে জানাতে পারেন।এমন আরো তথ্যমূলক আর্টিকেল পেতে ওয়েবসাইটটি ফলো করে সাথেই থাকুন ।ধন্যবাদ

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

অর্ডিনারি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url