তালের শাঁসের ১৬টি স্বাস্থ্য উপকারিতা ও গর্ভাবস্থায় তালের শাঁস খাওয়ার উপকারিতা


আপনি কি হাটে বাজারে বিক্রি করা তাল শাঁসের স্বাস্থ্য উপকারিতা সম্পর্কে জানতে চান।তাহলে আপনি সঠিক জায়গাতে এসেছেন।সুমিষ্ট সুস্বাদু কচি তালের শাঁস শিশু ও প্রাপ্তবয়স্কদের মানুষের কাছে খুবই পছন্দের একটি খাবার।এছাড়াও গর্ভাবস্থায় তালের শাঁস খাওয়ার উপকারিতা সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করব।


চারিদিকে যখন বিভিন্ন ফল ও খাবারের ফরমালিন ও অন্যান্য কেমিক্যালের ব্যবহার ছড়াছড়ি তখন কোন ধরনের ফরমালিন বা কেমিক্যাল ছাড়া ফল পেতে চাইলে বেছে নিতে পারেন তালের শাঁস।সুতরাং তালের শাঁস খাওয়ার স্বাস্থ্য উপকারিতা সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে সম্পূর্ণ আর্টিকেলটি মনোযোগ সহকারে পড়ুন।

বিস্তারিত শুরু করার আগে সূচিপত্র দেখে নিনঃ

তাল শাঁসের পুষ্টিগুণ

শুধু গ্রীষ্মকালেই রাস্তার মোড়ে বাজারের অলিতে -গলিতে কচি তাল বিক্রি করতে দেখা যায়। কচি তালের নরম শাঁস ছোট বড় সব বয়সী মানুষ খেতে পছন্দ করেন। তালের শাঁস রয়েছে অনেক খাদ্য শক্তি এবং বিভিন্ন খনিজ উপাদান সমূহ যা আমাদের শরীরে বহু রোগের প্রতিরোধক হিসেবে কাজ করে থাকে।আসুন তাহলে এই মিষ্টি স্বাদের কচি তালের শাঁসের পুষ্টিগুণ সম্পর্কে জেনে নেই। মিষ্টি স্বাদের কচি তালের শাঁস শুধু খেতেই সুস্বাদু নয় বরং পুষ্টিগুণে অনেক ভরপুর।


সাম্প্রতিক এক গবেষণায় দেখা গেছে প্রতি ১০০গ্রাম তালের শাঁসে ৮৭.6 গ্রাম জলীয় অংশ আছে ০.৮ গ্রাম আমিষ,০.৫ গ্রাম ফ্যাট,১০.৯ গ্রাম কার্বোহাইড্রেট,১গ্রাম খাদ্য আঁশ,২৭ মিলিগ্রাম ক্যালসিয়াম,৩০ মিলিগ্রাম ফসফরাস,১মিলিগ্রাম আয়রন,০.৪ গ্রাম থায়ামিন,০.২মিলিগ্রাম রিবোফ্লাভিন,০.৩মিলিগ্রাম নিয়াসিন,৪মিলিগ্রাম ভিটামিন সি এবং ০.৫মিলিগ্রাম খনিজ রয়েছে। তালের শাঁসের এসকল উপাদান সমূহ আমাদের শরীরকে বিভিন্ন রোগ থেকে রক্ষা করে এবং রোগ নিরাময়ের সহায়তা করে।

তালের শাঁস কখন পাওয়া যায়

এত পুষ্টিতে ভরপুর তালের শাঁস কখন পাওয়া যায় এ সম্পর্কে আমাদের মাঝে অনেকেই রয়েছেন যারা তালের শাঁস খেতে পছন্দ করেন কিন্তু তালের শাঁস কখন পাওয়া যায় সেটা অনেকেই জানেন না। চলুন তাহলে আর দেরি না করে জেনে নেই তালের শাঁস কখন পাওয়া যায় সে সম্পর্কে।বসন্তের শেষে তালগাছে ফুল ধরে, আস্তে আস্তে ফুল থেকে তাল ফলে পরিণত হয়।

তালের শাঁস সাধারণত গ্রীষ্মের শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত অর্থাৎ বৈশাখ থেকে আষাঢ় মাসের মধ্যে পাওয়া যায়।তবে অনেক সময় আবহাওয়া বিবর্তনে এবং তালের বিভিন্ন জাত অনুযায়ী এর সময়কাল একটু এগিয়ে পিছিয়ে যেতে পারে।ফাল্গুন মাসের শেষের দিকেও কচি তালের শাঁস পাওয়া যায়।

আবার কিছু এলাকায়,আষাঢ় মাসের পরে শ্রাবণ মাসের শুরুর দিকে পর্যন্ত তালের শাঁস পাওয়া যায়। প্রতিটি তালে দুই থেকে তিনটি তাল শাঁস বা তালের বিচি থাকে। গ্রীষ্মের সময় কচি অবস্থায় তালের শাঁসের ব্যাপক চাহিদা থাকে গ্রাম থেকে শহর পর্যন্ত।

তালের শাঁসের স্বাস্থ্য উপকারিতা

গ্রীষ্মের মৌসুমে অন্যতম একটি আরামদায়ক ফল হচ্ছে কাঁচা তাল অর্থাৎ তালের শাঁস এশিয়ার দেশগুলোতে গ্রীষ্মের প্রচন্ড গরমে তালের শাঁস খুবই জনপ্রিয় একটি খাবার হিসেবে পরিচিত। আবার অনেকের কাছেও তাল্কুর নামেও পরিচিত। রসে ভরপুর তালের শাঁস নিয়ে রাস্তার মোড়ে মোড়ে বসে আছেন বিক্রেতারা। গ্রীষ্মের প্রচন্ড গরমে এই সময় শরীর শীতল রাখতে কচি তালের শাঁসের যেন বিকল্প নেই।

ভাদ্র মাসে যে তাল থেকে সুমিষ্ট ফল হয় তা গ্রীষ্মে থাকে কাঁচা অবস্থায়। আর এই কাঁচা তালের ভিতরের শাঁস ছোট বড় সব বয়সী মানুষের কাছে ফল হিসেবে খুবই জনপ্রিয় একটি খাবার।তালের শাঁসের রয়েছে এন্টিঅক্সিডেন্ট,আঁশ,ভিটামিন এবং খনিজ উপাদান।এছাড়াও তালের শাঁস এর বেশি ভাগ অংশই জলীয়। গ্রীষ্মের প্রচন্ড গরমে আমাদের শরীর থেকে দ্রুত পানি হারিয়ে যায়, হারানো পানি শূন্যতা পূরণ করতে সহায়তা করে তালের শাঁস।

এছাড়াও পেটের বিভিন্ন সমস্যা দূর করতে দারুন কার্যকারী উপকারিতা মিলে।তালের শাঁস খাওয়ার স্বাস্থ্য উপকারিতা সম্পর্কে নিচে বিস্তারিত আরো আলোচনা করব। সুতরাং আজকের এই আর্টিকেলটি মনোযোগ সহকারে পড়ুন।
  • তালের শাঁসে আছে পটাশিয়াম,ক্যালসিয়াম,সালফার,আইরন,সেলেনিয়াম,ম্যাঙ্গানিজ,কপার, ম্যাগনেসিয়ামের মত বেশ কিছু উপকারী উপাদান।যা আমাদের চোখের জন্য অত্যন্ত উপকারী।তালের শাঁসে থাকা ভিটামিন এ আমাদের চোখের দৃষ্টি শক্তিকে বাড়াতে সহায়তা করে থাকে। এছাড়াও চোখে এলার্জি সহ অন্যান্য চোখের রোগের প্রকোপ কমাতে অনেক কার্যকরী এই তালের শাঁস।
  • তালের শাঁস পানি সমৃদ্ধ যা আমাদের প্রচন্ড গরমে বাড়তি পানি চাহিদা মেটাতেও সাহায্য করে এই তালের শাঁস।তাই এই প্রখর গরমে পানি ও পানি পানি জাতীয় খাবারের পাশাপাশি শরীরকে ভিতর থেকে শীতল ও আরামদায়ক করতে সুমিষ্ট তালের শাঁস খান।
  • আপনার যদি রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে না থাকে। তাহলে আপনি তালের শাঁস খেতে পারেন।কারণ তালের শাঁস খেলে আমাদের শরীরে নাইট্রেটের পরিমাণ বেড়ে যায়।যা প্রাকৃতিক উপায়ে আমাদের শরীরের রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণ ও স্বাভাবিক রাখতে সহায়তা করে থাকে।
  • আমাদের দেহে যা কিছুই প্রবেশ করে তা প্রসেস করে আমাদের লিভার।আর এই বিশেষ অঙ্গটি নিয়মিত যত্ন না নিলে আপনি অকাল মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়তে পারেন।আপনার যদি লিভার জনিত সমস্যা থেকে থাকে তাহলে আপনি তালের শাঁস খেতে পারেন।কারণ তালের শাঁস খেলে এটি আমাদের লিভার থেকে ক্ষতিকর ও দূষিত পদার্থ বের করে দেয়।
  • তালের শাঁসে আছে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট তাই তালের শাঁস খেলে আমাদের শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি পায়। আর এর ফলেই আমরা বিভিন্ন রকম মৌসুমী অসুখ থেকে মুক্তি পায়।
  • তালের শাঁসে রয়েছে ক্যালসিয়াম,ম্যাগনেসিয়াম,আয়রন ও ফসফরাস যা আমাদের হার গঠনে ভূমিকা রাখে।আমাদের দাঁত ও দাঁতের সুরক্ষায় কাজ করে এবং দাঁতের ক্ষয়রোধ করে।
  • উচ্চমাত্রায় সোডিয়াম এবং পটাশিয়াম মিলে তালের শাঁসে যা আমাদের শরীরের ইলেকট্রোলাইট এর ভারসাম্য বজায় রাখতে সহায়তা করে।ফলে গ্রীষ্মের এই প্রচন্ড গরমে ক্লান্তি দূর হয়।
  • কোষ্ঠকাঠিন্য ও হজমজনিত সমস্যা থেকে মুক্তি পেতে আঁশ সমৃদ্ধ তালের শাঁস খেতে পারেন। পাশাপাশি ভালো রাখে আমাদের শরীরে অস্তের স্বাস্থ্য কে।
  • আয়নের উৎস তালের শাঁস নিয়মিত খেলে যা মেয়েদের ক্ষেত্রে খুবই উপকারী।এছাড়াও অ্যামোনিয়া বা রক্তশূন্যতা দূর করতে সাহায্য করে।
  • তালের শাঁস কোষের প্রতিরোধ করে।এবং শরীরের জন্য উপকারী ভিটামিন সি,বি কমপ্লেক্স মিলে তালের শাঁস ।এতে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা শক্তিকে বাড়িয়ে দেয়।
  • ক্যান্সারের মত প্রাণঘাতী একটি রোগ নিরাময়ে তালের শাঁস বেশ উপকারী।তালের শাঁস রয়েছে এমন কিছু কার্যকারী উপাদান যা ক্যান্সার প্রতিরোধে সক্ষম।
  • আপনি যদি একটুতেই কোন কিছু ভুলে যান বা স্মৃতিশক্তি কম থাকে।তাহলে আপনি তালের শাঁস খেতে পারেন।কারণ তালের শাঁসে থাকা পুষ্টিকর উপাদান সমূহ আপনার কোন কিছু মনে রাখার ক্ষমতাকে বাড়িয়ে দিতে সহায়তা করে।
  • গর্ভবতী মহিলাদের তালের শাঁস খেতে পরামর্শ দিয়ে থাকেন ডাক্তাররা। কারণ তালের শাঁস খেলে হজম শক্তি বৃদ্ধি করে।এবং তালের শাঁস থাকা ভিটামিন সি,বি বমি ভাব দূর করে খাওয়া রুচি বাড়াতে সাহায্য করে।
  • আপনার ত্বককে সুন্দর উজ্জ্বল এবং তৃপ্তিময় করে তুলতে চান। তাহলে তালের শাঁস খান।আমরা জানি তালের শাঁসে জলীয় অংশে ভিটামিন এ ভিটামিন সি সহ আয়রন,ক্যালসিয়ামের মতো মিনারেল রয়েছে। যা আমাদের ত্বক এবং চুলের জন্য খুবই উপকারী।
  • তালের শাঁস খেলে ঘামাচি,ডিহাইড্রেশন,শুষ্কত্বক,কিডনিতে সমস্যা চুল পড়া তাপ সম্পর্কিত একাধিক সমস্যা প্রতিরোধে সহায়তা করে।তালের শাঁস খেলে শরীর ডিহাইড্রেট করে না, অতিরিক্ত ঘামের কারণে নষ্ট হয়ে যাওয়া পুষ্টি এবং ইলেকট্রোলাইট গুলি পূরণের সহায়তা করে।
  • অতিরিক্ত রোদে বা গরমে এলার্জি দেখা দিলে তালের খোসা লাগিয়ে দিলে উপকার পাওয়া যায়।তাছাড়াও সানবান থেকে মুক্তি পেতে তালের শাঁসের খোসা বা তালের শাঁসের প্যাক লাগালে ভালো কাজে দেয়।

গর্ভাবস্থায় তালের শাঁস খাওয়ার উপকারিতা

আপনি যদি একজন গর্ভবতী হয়ে থাকেন অথবা আপনার স্ত্রী অথবা আপনার পরিবারের কেউ,তাহলে আজকের এই আর্টিকেলে অংশটুকু দেখা আপনার জন্য অত্যন্ত জরুরী।ইতিমধ্যে আপনাদের মাঝে তালের শাঁস খাওয়ার উপকারিতা সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করেছি।


এখন এই আর্টিকেলের অংশটুকুতে গর্ভাবস্থায় তালের শাঁস খাওয়ার উপকারিতা সম্পর্কে জানব।অনেকেই আছেন এই বিষয়টি সম্পর্কে জানেন না।চলুন তাহলে আর দেরি না করে জেনে নেই গর্ভাবস্থায় তালের শাঁস খাওয়ার উপকারিতা সম্পর্কে।

গর্ভবতী নারীদের কতটুকু খাবার খেতে হবে তা একটু চিন্তার বিষয়।নারীদের গর্ভাবস্থায় প্রায় সব খাবার খাওয়ার খুব বেশি ইচ্ছে জাগে যা স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর।তাই এ সময় অবশ্যই নিজেকে ক্ষতিকর খাবার গুলো খাওয়া থেকে বিরত রাখতে হবে।কেননা গর্ভাবস্থায় স্বাস্থ্যকর খাবার খেলে মা ও গর্ভে থাকা শিশু সুস্থ থাকে।

গর্ভাবস্থায় বমি করার জন্য একাধিকবার বাথরুমের যাওয়া গল্প ভুলে যাওয়া কঠিন।বার বার বমি করার ক্লান্তির সাথে প্রচুর পরিমাণে এসিডিটি।গর্ভাবস্থায় তালের শাঁস খেলে এসব স্বাস্থ্য সমস্যা প্রশমিত করা যায়।পুষ্টি সমৃদ্ধ এবং কম ক্যালরিযুক্ত তালের শাঁস খাওয়ার মাধ্যমে গর্ভবতী মহিলাদের নানা রকম খাবারের আকাঙ্ক্ষার কিছুটা মেটানো যেতে পারে।

এছাড়াও তালের শাঁসে থাকা পুষ্টিগুণ গর্ভবতী মা ও শিশুর উভয়ের স্বাস্থ্য ভালো রাখতে সহায়তা করে। মায়ের বুকের দুধের উৎপাদন বৃদ্ধি এবং পুষ্টির যোগান দিতে গর্ভাবস্থায় তালের শাঁস খেতে পারেন।তাই যেসব শিশু মায়ের বুকের দুধ খায় তাদের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা অনেক ভালো হয়। তালের শাঁসে আছে পটাশিয়াম,ক্যালসিয়াম,আয়রন সালফার,ম্যাগাজিন,কপার এবং ক্যালসিয়াম এর মতো বেশ কিছু উপকারী উপাদান।যা গর্ভবতী ও বাচ্চার চোখের জন্য অত্যান্ত উপকারী।

গ্রীস্মের প্রচন্ড গরমে বাহিরে কাজ করা কর্মজীবী মানুষ হোক বা ঘরে কাজ করা মায়েরা হাঁসফাঁস করতে থাকে প্রচন্ড গরমে।অতিরিক্ত ঘামের কারণে আমাদের শরীর থেকে দ্রুত পানি শূন্য হয়ে পড়ে।সেটি পূরণ করতে পারে তালের শাঁস।কচি তালের শাঁসে ৯০ শতাংশের ওপরে জলীয় অংশ থাকে।তাই এই গরমে তালের শাঁস গর্ভবতী মায়ের পানি শূন্যতা দূর করে।

গর্ভাবস্থায় তালের শাঁস খেলে তেমন কোন সমস্যা হয় না বরং তালের শাঁস খেলে প্রচুর পরিমাণে উপকার পাওয়া যায়।তবে গর্ব অবস্থায় অতিরিক্ত তালের শাঁস না খাওয়াই ভালো।অতিরিক্ত খেলে পরবর্তীতে সমস্যা হতে পারে।গর্ভাবস্থায় তালের শাঁস খাওয়ার আগে অবশ্যই অভিজ্ঞ ডাক্তারের সঙ্গে পরামর্শ করে নিশ্চিত হন যে আপনার জন্য তালের শাঁস খাওয়া উপযোগী কিনা।আশা করি উপরিক্ত আলোচনা থেকে গর্ভাবস্থায় তালের শাঁস খাওয়ার উপকারিতা সম্পর্কে আপনি জানতে পারছেন।

গর্ভাবস্থায় তালের শাঁস খাওয়া যাবে কি

অনেক গর্ভবতী মায়ের আছেন যারা গর্ভাবস্থায় কচি তালের শাঁস খাওয়া যাবে কিনা এ নিয়ে অনেক চিন্তার মধ্যে থাকেন।আপনাদের এই সমস্ত চিন্তাগুলো দূর করার জন্য সঠিক তথ্য নিয়ে আপনাদের মাঝে হাজির হয়েছি।তাই চিন্তার কোন কারণ নেয়।যারা গর্ভবতী মায়েরা রয়েছেন তারা অবশ্যই জানতে চান এই বিষয়টি সম্পর্কে তো চলুন  এই বিষয়টি সম্পর্কে আপনাদের ধারণা দেওয়ার চেষ্টা করি।

গর্ভাবস্থায় তালের শাঁস খাওয়া যাবে এতে কোন সমস্যা নেই।গর্ভাবস্থায় মায়ের শরীরে অনেক পুষ্টি ঘাটতি পূরণ করে থাকে তালের শাঁস খাওয়ার মাধ্যমে।তালের শাঁস রয়েছে প্রচুর পরিমাণে এন্টিঅক্সিডেন্ট,পটাশিয়াম,সোডিয়াম,ভিটামিন,গলুকোজ যা গর্ভবতী মায়েদের শরীরে বিভিন্ন সমস্যা দূর করতে সাহায্য করে।এছাড়াও গর্ভাবস্থায় গর্ভবতী মায়েদের শরীর যখন অনেক দুর্বল হয়ে পড়ে তখন এ সময় তালের শাঁস খেলে শরীরে অনেক এনার্জি চলে আসে। 

গর্ভাবস্থায় তালের শাঁস খেলে শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি হয় এবং গর্ভাবস্থায় তালের শাঁস খেলে ভিটামিনের ঘাটতি পূরণ হয়।তবে তালের শাঁস কেনার পূর্বে অবশ্যই আপনাকে একটি বিষয়ে লক্ষ্য রাখতে হবে যেন তালের শাঁসে কোন রাসায়নিক স্প্রে করা না থাকে।

এছাড়াও গর্ভাবস্থায় আপনার ডায়েটে নতুন কিছু শুরু করার আগে অবশ্যই অভিজ্ঞ ডাক্তারের সঙ্গে পরামর্শ করে নিবেন।আশা করি উপরিক্ত আলোচনার মাধ্যমে গর্ভাবস্থায় তালের শাঁস খাওয়া যাবে কিনা সে ব্যাপারে আপনি নিশ্চয়ই বুঝতে পারছেন।

তালের শাঁস কিভাবে সংরক্ষণ করবেন

তালের শাঁস খুব সহজে নষ্ট হয়ে যায়,তাই তালের শাঁস সংরক্ষণ করতে ফ্রিজে রাখুন।ফলের খোসা ছাড়িয়ে শক্তভাবে সিল করা পাত্রে সংরক্ষণ করুন অথবা অক্সিডেশনের কারণে স্বাদ এবং রঙ হারিয়ে নষ্ট হয়ে যাবে।কচি তাজা তালের শাঁস কেনা নিশ্চিত করুন এবং তাল ফলটি তাজা কিনা জানার উপায় কালো খোসার উপরের অংশ কোচকানো আছে কিনা দেখে নিন। তাল গাছ থেকে অনেক আগে কাটা হলে খোসার চামড়া সংকুচিত হওয়ার লক্ষণ দেখা যাবে।উদাহরণস্বরূপ বলা যেতে পারে ডিহাইড্রেটেড ত্বক যেমন দেখায়।

তালের শাঁসের শরবত করার উপায়

গরমের শীতল ও আরামদায়ক পেতে তালের শাঁসের শরবত খেতে পারেন।তালের শাঁসের শরবত তৈরি করার জন্য আপনার প্রয়োজন হবে নরম তালের শাঁস,ডাবের পানি,খাবার পানি এবং চিনি পরিমাণ মতো।প্রথমে তালের শাঁসগুলো ছোট ছোট কিউব করে কেটে নিতে হবে।একটি ব্লেন্ডারে বাকি তালের শাঁস,ডাবের পানি ও ঠান্ডা পানি আর পরিমাণমতো চিনি দিয়ে ব্লেন্ড করে নিতে হবে।ব্লেন্ড করা হয়ে গেলে জগে নামিয়ে এর সঙ্গে কিউব করা তালের শাঁস মিশিয়ে গ্লাসে ঢেলে ঠান্ডা ঠান্ডা পরিবেশন করতে হবে।

সতর্কীকরণ

উপরিক্ত আলোচনায় আপনারা বুঝতে পারছেন তালের শাঁস নিঃসন্দেহে উপকারী।কিন্তু অতিরিক্ত খাওয়া হলে পেট গরম হয়ে পেট ব্যথা বমি ইত্যাদি সমস্যা দেখা দিতে পারে।তাই অতিরিক্ত তালের শাঁস খাওয়া থেকে বিরত থাকতে হবে।

পরিশেষে লেখকের মন্তব্য

প্রিয় পাঠক সম্পূর্ণ আর্টিকেলটি পড়ে আশা করি তালের শাঁসের স্বাস্থ্য উপকারিতা এবং গর্ভাবস্থায় তালের শাঁস খাওয়ার উপকারিতা সম্পর্কে একটি ধারণা দিতে সক্ষম হয়েছি।তবে মনে রাখবেন অতিরিক্ত যে কোন কিছুই আপনার স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতির কারণ হতে পারে তাই পরিমিত পরিমাণে খাবেন।

আজকে এই আর্টিকেলের মাধ্যমে আপনি যদি উপকৃত হয়ে থাকেন তাহলে অবশ্যই আপনার বন্ধুদের সাথে শেয়ার করে তাদের জানার সুযোগ করে দিন।এমন আরো তথ্যমূলক কনটেন্ট পেতে রিদু ব্লগ ওয়েবসাইটটির সাথেই থাকুন।ধন্যবাদ

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

অর্ডিনারি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url